কৃষি বিভাগ জানায়, অনেক এলাকায় গাছ উপড়ে পড়েছে। বুধবার রাত ৮টার দিকে ঝড়ের শুরু থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টা জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন ছিল। এ সময় মাগুরার ৪ উপজেলায় গড়ে ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সদরের শ্রীকুন্ডি গ্রামের কৃষক ঈদুল শেখ জানান, তার ৬ বিঘা জমিতে কলা ও পেঁপে চাষ করেছেন। কিন্তু সুপার সাইক্লোন আম্পানের তাণ্ডবে জমির কলা ও পেঁপে গাছ সব নষ্ট হয়ে গেছে। তার প্রায় ৪ লাখ টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
মাগুরা পৌর এলাকার প্রান্তিক কৃষক বাবলু মোল্যা জানান, তিনি ২ একর জমিতে কলার চাষ করেছেন। ঘূর্ণিঝড় আম্পানে তার জমির প্রায় দুই হাজার কলাগাছ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তার প্রায় ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি জানান, এনজিও থেকে লোন করে তিনি এই চাষাবাদ করেছিলেন এবং কলা বিক্রি করে লোন শোধ করার কথা ছিল। এখন তার আশা সরকারি কোনো সহযোগিতা পেলে আবার তিনি ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
সদর উপজেলার হাজরাপুর ইউনিয়নে চাষি মো. রবিউল ইসলাম জানান, হাজরাপুরসহ আশপাশের এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২০ হাজার লিচু , আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে বাগান রয়েছে। যার মধ্যে লিচু বাগান রয়েছে প্রায় ৭ হাজার। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে গোটা এলাকার সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতি বছর এসব এলাকা থেকে ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকার আম ও লিচু বিক্রি হয় । তাই এ এলাকার কৃষকরা তাদের ফসলহানীর কারণে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষকের এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া কঠিনই হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাহিদুল আমিন জানান, জেলায় ৬০০ হেক্টর জমিতে লিচু, ১৩০০ হেক্টরে আম, ৭০০ হেক্টরে কলা, ৬০০ হেক্টর জমিতে পেঁপে, ৬২০ হেক্টরে কাঁঠাল, ২০০ হেক্টর জমিতে ডালিম, ৭২০ হেক্টরে মুগডাল, ২৭২০ হেক্টরে বিভিন্ন সবজি, ২৮২০ হেক্টরে তিল এবং ৩৫ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে।
ঝড় ও বৃষ্টিপাতে ক্ষতিগ্রস্ত মোট ৮ হাজার ৫৭১ হেক্টর জমির ফসলের মধ্যে পেঁপে ও কলার খেত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিপুল সংখ্যক গাছের আম ও লিচু ঝড়ে পড়েছে। ক্ষতি নিরুপণের কাজ চলছে বলে জানান তিনি।